দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ জানিয়েছেন, দেশের স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ খুবই উদ্বিগ্ন।
সোমবার বিকেলে চেয়ারম্যানসহ দুদকের কর্মকর্তারা রাষ্ট্রপতির কাছে দুদকের বার্ষিক প্রতিবেদন-২০১৮ জমা দেন।
পরে বঙ্গভবনের সামনে সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আজ আমরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেছি। তিনি স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন।’
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে আমাদের বক্তব্য- ডাক্তার সাহেব যারা আছেন, তারা এদেশের মানুষের জীবন নিয়ে খেলেন। খেলা বলতে দে আর নট প্লেয়িং। দেয়ার আর ডিলিং লাইক হিউম্যান বিং। তারা যেন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন, সেই আহ্বান থাকবে আমাদের।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার দুর্নীতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। শ্রেণিকক্ষের দুর্নীতি বন্ধে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। তিনি শিক্ষায় দুর্নীতি বন্ধে জিরো টলারেন্স দেখানোর কথা বলেছেন।’
শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ক্লাসে আপনারা কোয়ালিটি এডুকেশন দেন। এতে করে এই শিক্ষা নিয়ে আগামী দিন আমাদের সন্তানেরা দেশকে নেতৃত্ব দিতে পারবে।’
ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি বলেছেন- সরকারের যে সেক্টরে দুর্নীতি হবে, সেখানেই যেন দুদক হস্তক্ষেপ করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দিকে বিশেষ নজর দিতে বলেছেন। এই সেক্টরের দুর্নীতির প্রকোপ কমাতে বলেছেন।’
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি গ্রাম পর্যায়ে যে সব সরকারি কর্মচারী বা তহসিলদার আছেন, তাদের দুর্নীতি বন্ধ করতে বলেছেন। কেন না গ্রামের মানুষ ওসি-ডিসির কাছে যেতে পারে না। তাদের নিয়ন্ত্রণ করা গেলে, গ্রামে ঘুষের হার কমে আসবে। ছোট থেকে দুর্নীতি শুরু হয়, পরে বড় বড় দুর্নীতি হয়।’
চলতি বছরের লক্ষ্য জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এ বছর বড় কাজ থাকবে, যারা সরকারি সম্পত্তি, খাস জমি, রেলওয়ের জমি, রোড-হাইওয়ের জমি, বন বিভাগের জমি দখল করেছে, তাদের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স থাকব। আশা করি, ভুল করে বা জ্ঞাতসারে সরকারি সম্পত্তি, জনগণের সম্পতি যারা কব্জায় নিয়েছেন, তারা দ্রুত ফিরিয়ে দিবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করেছি। এই প্রতিবেদন নিয়ে আমরাই সন্তুষ্ট না। কারণ, জনআকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে দুর্নীতি কমাতে আমরা পারিনি।’
গত বছরের তুলনায় মামলা ও চার্জশিটের হার কমার বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা কোয়ালিটি চার্জশিট চাই। এমন চার্জশিট চাই, যাতে শতভাগ শাস্তি নিশ্চিত করা যায়। আর যাতে মানুষের হয়রানি না হয়, সেদিকেও খেয়াল রেখেছি, যার কারণে কমে গেছে।’
ব্যাংকের দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকগুলো আইন-কানুন অনুযায়ী পরিচালিত হোক। দুদক তাতে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। ব্যবসায়ীরা ব্যাংকে লোন নেবেন। কিছুই বলব না। আমাদের কথা হচ্ছে, ব্যাংককে নিয়ম মেনে চলতে হবে।’