সীমান্তে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশিরা খুন হলেও বঙ্গোপসাগরে সাত দিন ধরে ভাসতে থাকা পশ্চিমবঙ্গের রবীন্দ্রনাথ দাসকে উদ্ধার করে বাংলাদেশি নাবিক মহানুভবতা ও মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
এ ঘটনা ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে গেছে। টানা সাত দিন তিনি বঙ্গোপসাগরে ভেসে ছিলেন৷ কুতুবদিয়া থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি এখন সুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন জাহাজে থাকা কর্মকর্তারা। বাংলাদেশের জাহাজ এমভি জাওয়াদের ক্যাপ্টেন ও নাবিকরা এই উদ্ধারে নিযুক্ত ছিলেন৷
হলদিয়া থেকে কুতুবদিয়া পর্যন্ত প্রায় ৬০০ কিলোমিটার ভেসে এসেছেন রবীন্দ্রনাথ দাস৷ ৭ দিন ভেসে থাকার সময় শুধুমাত্র বৃষ্টির জল খেয়েই তিনি তৃষ্ণা মেটান৷
বুধবার (১০ জুলাই) বঙ্গোপসাগরে ভেসে থাকা ওই ব্যক্তিকে জাহাজের ক্যাপ্টেন দেখতে পান৷ এরপর জাহাজটি তার কাছে নিয়ে গিয়ে লাইফ জ্যাকেট ফেলা হয়৷
কিন্তু প্রবল স্রোতে তিনি কিছু ধরতে পারেননি৷ অনেকটা দূরে ভেসে যান৷ পরে কোনওরকমে লাইফ জ্যাকেটটা ধরতে পারেন৷ ততক্ষণ জাহাজটি ওই ব্যক্তির পিছনেই ছিল৷
প্রায় তিন নটিক্যাল মাইল দূরে তাকে ফের পাওয়া যায়। এরপর উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া রবীন্দ্রনাথ পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা৷ বাংলা জানা থাকায় তাঁর সঙ্গে কথা বলতে সুবিধা হয়েছে৷
রবীন্দ্রনাথ দাস জানিয়েছেন, হলদিয়ার অদূরে বাংলাদেশ ভারত সমুদ্র সীমান্তের কাছে তিনি মাছ ধরছিলেন৷ হঠাৎ ঝড়ের কবলে পড়লে ফিশিং বোট উলটে যায়।
বোটের ভেতর ১৫ জনের মধ্যে ১০ জন ছিটকে পড়েন। বাকি ৫ জন ছিল তাদের খবর অজানা। ৩ জন একসাথে ভেসে গিয়েছিলেন৷ এদের মধ্যে ২ জন তলিয়ে গিয়েছেন৷ বেঁচে যান রবীন্দ্রনাথ৷
সীমান্তে যখন দুই বাংলাদেশিকে হত্যা করলো বিএসএফ ঠিক সেই মুহূর্তে বাংলাদেশি নাবিকদের এমন মানবতাবাদী আচরণ বিএসএফ কর্মকর্তাদের ভাবিয়ে তুলবে বলে মনে করেন কুটনীতিবিদরা।