প্রধানমন্ত্রীর ‘হক চাচা’ খ্যাত মজিবুল হক ছিলেন ১৯৭১ সালে তৎকালীন বরগুনা মহকুমা মুক্তিযুদ্ধ সংগ্রাম পরিষদের সদস্য। অথচ তার নামও এসেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকাশিক রাজাকারের তালিকায়।
সম্প্রতি একাত্তরের রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও স্বাধীনতা বিরোধীদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। প্রকাশিত এ তালিকায় বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় রয়েছে মুক্তিযুদ্ধকালীন মুক্তিযুদ্ধ সংগ্রাম পরিষদের তৎকালীন পাথরঘাটা থানার আহ্বায়ক মো. মজিবুল হকের নামও। অথচ আমৃত্যু মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত মজিবুল হক ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও যাকে শ্রদ্ধা করতেন।
তাই মন্ত্রণালয় প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় তার নাম আসায় ক্ষুব্ধ ও বিরুপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বরগুনার সকল স্তরের মানুষ। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বরগুনা শহরে এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
মজিবুল হকের স্বজন ও রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা জানান, রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে আমৃত্যু তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের সদস্য। ১৯৭০ সালে পাথরঘাটা থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতাকালীন সভাপতি নির্বাচিত হয়ে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ছিলেন এই দায়িত্বে।
এছাড়া, ১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাথরঘাটা-বামনা সংসদীয় আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আ. রশিদ বলেন, মজিবুল হক একজন সৎ মানুষ ছিলেন। তিনি পাথরঘাটা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন। কী কারণে তার নাম রাজাকারের তালিকায় এসেছে আমি বলতে পারব না। প্রশাসনের কাছে আমাদের দেওয়া রাজাকারের তালিকায় তার নাম থাকার প্রশ্নই আসে না।
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় বরগুনা থেকে আরও যাদের নাম এসেছে— মাহবুব-উল-আলম খান, এসএমএম গোলাম মাওলা, মো. আবদুল আজিজ বিএসসি, মো. মতিয়ার রহমান, মো. আবদুল রশিদ, মি. এবিএম হোসেন (মানিক), কাঞ্চন আলী মল্লিক, মো. আশরাফ আলী হাজী, কাজের মীর, আবদুল জব্বার হাওলাদার, ফকর আলী, ফজলুল করীম সিকদার, আদম আলী, আবদুল মালেক মিয়া, মমিনউদ্দিন মল্লিক, আবদুল আজিজ হাওলাদার, রফিকুর সিকদার, আলম মিয়া, মো. হারুণ অর-রশিদ, মা: মান্নান মিয়া, আবদুল বারী মিয়া, মেরাজুল ইসলাম, আবদুল মজিদ মল্লিক, সেকান্দার মল্লিক, মো. শাহজাহান মিয়া, মো. আবদুল ছত্তার মিয়া(বিকম), মো. নুরুল আমিন, রশিদ জমাদ্দার, আবদুর রহমান মিয়া, হাতেম আলী হাওলাদার, মো. রফিকুল ইসলাম, আলতাফ হোসেন, আবদুল খালেদ মিয়া, আলতাফ হোসেন, জামাল আহমেদ সিকদার (চানমিয়া), ফকর উদ্দিন আহমেদ, নয়ন আলী হাওলাদার, হরমুজ খা, চান সিকদার, আবদুল মজিদ, মকবুল হোসেন, মফিজ উদ্দিন, আবুল হোসেন, আবদুল মান্নান, নুর মোহাম্মাদ, মজিবুল হক (নয়া ভাই), সৈয়দ হায়দার আলী (হাফেজ), আমির হামজা (রুস্তম খা), গোলাম কাদের (কাদু), শেখ আবদুল মালেক, মো. সালেহ আহমেদ (সালেহ), খলিলুর রহমান (মানিক) ও মো. আমজাদ আলীর নাম।