পাবনা সদর উপজেলায় মিলাদের খিচুরি খেয়ে এক স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এঘটনায় আরও অন্তত ২৫ জন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
রবিবার (৭ জুলাই) দুপুরে সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের বলরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সুমাইয়া খাতুন সখি শহীদ আহমেদ রফিক উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়েল সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ও বলরামপুর গ্রামের সেলিম শেখের মেয়ে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রঞ্জন কুমার দত্ত জানান, শুক্রবার ওই গ্রামের মৃত ঈমান আলীর ছেলে শহিদ উদ্দিন তার বাবার কুলখানী উপলক্ষে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে লোকজনকে খিচুরি খাওয়ান। খিচুরি খাওয়ার পর একে একে অসুস্থ হতে থাকেন গ্রামবাসী। শুরুতে বিষয়টি গুরুত্ব না দিলেও রবিবার সকাল থেকে ওই গ্রামে প্রায় ৩০ জন অসুস্থ হয়ে যায়। পরে অসুস্থদের মধ্যে অন্তত ২৫ জনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে আনার পথে সুমাইয়া খাতুন নামের সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী মারা যায়।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ডাইরিয়া ওয়ার্ডের চিকিৎসক হাবিবুল ইসলাম বলেন, ‘ডাইরিয়া জনিত রোগেই এরা সবাই অসুস্থ হয়েছে। আর সখি মারাত্মক অসুস্থ হলেও যথা সময়ে চিকিৎসা না পাওয়ার কারণে হাসপাতালে আনার পথে মারা গেছে।’
অসুস্থ অধিকাংশই ডাইরিয়া ও পেটের পীড়া জনিত রোগে আক্রান্ত বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। ধারণা করা হচ্ছে- ওই মিলাদের খিচুরি খেয়েই এই ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তারা।
পাবনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন ঘটার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ওই গ্রামে বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। আমরা দোগাছি ইউনিয়নের বলরামপুর গ্রামে এরই মধ্যে একটি স্বাস্থ্য ক্যাম্প স্থাপন করে অসুস্থদের চিকিৎসা দেয়া শুরু করেছি। তবে অনেকেই ওই মিলাদে অংশগ্রহণ করে নাই এবং ওই খিচুরিও খায় নাই, তবুও অসুস্থ হয়েছে। এমন লোকজনকেও আমরা পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে প্রকৃত ঘটনা কি।
পাবনা জেলা প্রশাসক (ডিসি) কবির মাহমুদ বলেন, ঘটনাস্থলে জরুরি সেবা নিশ্চিত করার জন্যে একটি অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে। পাশাপাশি পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ২২ জন চিকিৎসককে সতর্কতার সাথে কাজ করার জন্যে অনুরোধ করা হয়েছে এবং মৃত মেয়েটির পরিবারকে তাৎক্ষণিক ভাবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটি মন্ত্রণালয়ে অবহিত করার পরে ঢাকার রোগতত্ত্ব ও নিরাময় কেন্দ্রের একটি বিশেষজ্ঞ টিম পাবনার উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যেই রওয়ানা হয়েছেন বলেও জানান জেলা প্রশাসক।