সম্প্রতি নাগরিকদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার সুবিধার্তে বাড়ির মালিকদের তিন মাসের ভাড়া না নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে উগন্ডার সরকার। বাংলাদেশে এমন কোনো ঘোষণা না এলেও নিজ উদ্যোগে সামান্য কিছু মানুষ ঠিকই এগিয়ে এসেছেন। তাদেরই একজন শেখ শিউলী হাবিব। ঢাকা শহরে তার একটা বাড়িতে বসবাসরত ভাড়াটিয়াদের মার্চ মাসের ভাড়া মওকুফ করে দিয়েছেন তিনি!
একটা ট্রাভেল এজেন্সির মালিক শিউলী হাবিব এক জাতীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কবলে পড়ে সারা পৃথিবী এখন থমকে গেছে। এইটা থামাতে আমাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে যতটা সম্ভব কিছু করা উচিত। আমার ভাড়াটিয়ারা অনেকটা দিনমজুর।
তারা দিন আনে দিন খায়। করোনার কারণে মানুষ সব ঘরবন্দি হয়ে যাচ্ছে, তাদের কাজও কমে গেছে। এখন তারা নিজেরা খাবে নাকি আমাকে বাসার ভাড়া দিবে? এসব ভেবেই আমি তাদের জন্য মার্চ মাসের ভাড়া মওকুফ করে দিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘আমার বাবা শেখ মোবারক হোসেন একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তার কাছ থেকেই মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ শিখেছি। গত কয়েকদিন ধরেই ভাবছিলাম, আমি আমার অবস্থান থেকে কী করতে পারি?
আমি নিজেও মধ্যবিত্ত মানুষ। উচ্চবিত্তদের প্রচুর টাকা আছে, তাদের অভাব হবে না। কিন্তু মধ্যবিত্তের সংকট বেশি। তারপরও আমি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।’ রাজধানীর জুরাইনের দারোগাবাড়ি ১ নম্বর সড়কের বাড়ির ভাড়াটিয়াদের ভাড়া মওকুফ নিয়ে শিউলী হাবিবের ফেসবুক পোস্টটি ভাইরাল হয়েছে।
ফেসবুকে পোস্ট করা নিয়ে তিনি সেই গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি প্রথমে চাইনি নিজের একটা সামান্য কাজ প্রচার করতে। তবে আমার স্বামীর পীড়াপীড়িতে এটা নিয়ে ফেসবুকে লিখেছি। আমার স্বামীর যুক্তি ছিল, এটা দেখে দেশের আরও অনেক বাড়ির মালিক উদ্বু্গ্ধ হবে।
তারাও এগিয়ে আসবে ভাড়াটিয়াদের পাশে।’ শুধু ভাড়া মওকুফই নয়, নিজের বাসার গৃহকর্মীদের জন্যও করোনাভাইরাসের এই সময় জরুরি ব্যবস্থা নিয়েছেন শিউলী হাবিব। নিজের দুই গৃহকর্মীকে তিনি একমাসের ছুটি দিয়েছেন। সঙ্গে দিয়ে দিয়েছেন বেতন এবং এক বস্তা করে চাল। কাজ করতে বাসায় আসার পথে সেই গৃহকর্মীরা আক্রান্ত হতে পারেন করোনায়। তাদের মাধ্যমে বাসায় ছড়াতে পারে এই মারাত্মক ভাইরাস। তাই এই চমৎকার এবং প্রশংসনীয় উদ্যোগটি নিয়েছেন শিউলী হাবিব।