এবার যুব লীগের দুই নেতাকে যে নির্দেশনা দিলেন শেখ হাসিনা

ডেস্ক রিপোর্টার, প্রকাশ: ২০১৯-১১-০২ ২০:০০:৩৯, আপডেট: ২০১৯-১১-০২ ২০:০৩:৩১

এবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে না বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক চয়ন ইসলাম এবং সদস্য সচিব হারুনুর রশীদ আজ বিকেলে দেখা করেছেন। সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী তাদের কংগ্রেসের (কাউন্সিল) দিক মনোযোগি হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন।

উল্লেখ্য যে, আগামী ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৭ম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ক্যাসিনো বাণিজ্যসহ নানা রকম অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার কারণে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী এ সংগঠনের এখন টালমাটাল অবস্থা।

এই সংগঠনের সভাপতিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সংগঠনটির সমাজকল্যান বিষয় সম্পাদক জি কে শামীম একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার। এছাড়াও ঢাকা দক্ষিণ মহানগরের সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ একাধিক নেতা ক্যাসিনো বাণিজ্য- সন্ত্রাসসহ নানা অপকর্মে কারন্তরীণ রয়েছে। এরকম অবস্থায় আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

ওই বৈঠকেই যুবলীগের কংগ্রেসের জন্য প্রস্তুতি কমিটি তৈরী করে। চয়ন ইসলামকে আহ্বায়ক এবং হারুনুর রশীদকে সদস্য সচিব করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। আহ্বায়ক কমিটি গঠন করার পর আজই এই দুই নেতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে কংগ্রেসের পোস্টারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি নীতি নির্ধারনী নির্দেশনা দেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুবলীগের কংগ্রেসের ব্যাপারে শুধুমাত্র দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গেই কথা বলার জন্য এই দুই নেতাকে নির্দেশ দিয়েছেন। অন্য কেউ যেন যুবলীগের ব্যাপারে নাক না গলায় বা যুবলীগের কংগ্রেসের ব্যাপারে যাতে হস্তক্ষেপ না করে সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখছেন আওয়ামী সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ছাত্রলীগের মতো যুবলীগে একটি সিন্ডেকেট তৈরি হয়েছিল এবং সেই সিন্ডিকেটের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল যে, জাহাঙ্গীর কবীর নানক, আবদুর রহমান, বিএম মোজামেল ও বাহাউদ্দীন নাসিমকে কংগ্রেসের কমিটি করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু যুবলীগের দায়িত্বশীল সূত্র গুলো বলছে যে, আওয়ামী সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ধরণের কোনো নির্দেশনা দেননি বরং তিনি সরাসরি যুবলীগের কংগ্রেস এবং দলের সাধারণ সম্পাদক এবং তার মাধ্যমে যাবতীয় দায়িত্ব পালন করার নির্দেশনা দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, এর আগে ছাত্রলীগের কমিটি করার জন্য এই চার নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই চার নেতাই সেই সময় সিন্ডিকেট করেছিল এবং অনেক বিতর্কিত নেতাই ছাত্র লীগে অনুপ্রবেশ ঘটেছিল যার ফলে ছাত্রলীগের বর্তমান পরিস্থির সৃষ্টি হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের ঐ শীর্ষ নেতা মনে করেন।

সে কারণে শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে যুব লীগেকে একটি ক্লিন ইমেজের সংগঠন হিসেবে দাঁড় করানোর জন্য আওয়ামী সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি তত্ত্বাবধান করছেন এবং এখানো যেন কোনো রকম বিতর্কিত ব্যক্তিরা স্থান না পায় সেজন্য কংগ্রেসকে ঘিরেই তৎপরতা চলছে।

উল্লেখ্য, কংগ্রেসে সারাদেশ থেকে যে কাউন্সিলর আসবে সেই কাউন্সিলর নির্ধারণের ক্ষেত্রেও সতর্ক নজরদারি রাখা হবে। কোনো বিতর্কিত ব্যক্তি বা অন্য দল থেকে আসা কেউ যাতে যুবলীগের কংগ্রেসে কাউন্সিলর হিসেবে আসতে না পারে সে ব্যপারটি নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র গুলো বলছে, কংগ্রেসে কাউন্সিলরদের তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর তা আওয়ামী সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হবে। আওয়ামী সভাপতি বিষয়টি যাচাই বাছাই করে দেখবেন এবং দেখার পর যারা বিতর্কিত নন তাদের ব্যপারে সবুজ সংকেত দেওয়ার পর তারা কংগ্রেসে আসতে পারবেন। আওয়ামী লীগ এই কংগ্রেসের মাধ্যমে যুব লীগের ব্যপারে যে বিতর্ক এবং যুবলীগকে ঘিরে যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছিল তা থেকে মুক্ত করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।- বাংলা ইনসাইডার.