রিফাত হত্যা: স্ত্রী মিন্নিকে নিয়ে গেছে পুলিশ

ডেস্ক রিপোর্টার, প্রকাশ: ২০১৯-০৭-১৬ ১২:২০:২০

বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যার ঘটনায় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরগুনা পুলিশ লাইনে নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল সোয়া ১০ টার দিকে বরগুনা পৌরসভার মাইট এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে পুলিশ লাইনে আনা হয় বলে জানিয়েছেন বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন।

তিনি গণমাধ্যমকে জানান, রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১ নম্বর সাক্ষী মিন্নি। তাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরগুনা পুলিশ লাইনে আনা হয়েছে। তবে এ মামলায় তাকে এখন পর্যন্ত আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি বলেও জানান মারুফ হোসেন।

গত ২৫ জুন বরগুনা শহরের কলেজ রোডে রিফাত শরীফকে (২৩) তার স্ত্রীর সামনেই কুপিয়ে আহত করে একদল লোক। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। এ পর্যন্ত মামলার এজাহারভুক্ত ছয়জনসহ মোট ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা করেছে পুলিশ। হত্যা মামলার মূল আসামি সাব্বির আহম্মেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।

এরই মধ্যে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে এসে রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ তার ছেলেকে হত্যায় মিন্নির জড়িত থাকার অভিযোগ তোলেন।

দুলাল বলেন, “নয়নের সঙ্গে বিয়ের ঘটনা মিন্নি ও তার পরিবার ‘সুকৌশলে’ গোপন করে গেছে। ওই বিয়ে বহাল থাকা অবস্থায় শরিয়া বহির্ভূতভাবে মিন্নি তার ছেলেকে বিয়ে করেছেন। রিফাতের সঙ্গে বিয়ের পরও মিন্নি নয়নের বাসায় আসা-যাওয়া ও যোগাযোগ রক্ষা করতেন।”

রিফাত হত্যার আগের দিন ২৫ জুলাই মিন্নি নয়নের বাসায় গিয়েছিলেন। মিন্নি প্রতিদিন একা একা কলেজে গেলেও ২৬ জুলাই রিফাতকে ডেকে কলেজে নিয়ে গেছেন বলে দাবি করেন দুলাল। তিনি মিন্নিকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানান সংবাদ সম্মেলনে।

এদিকে মিন্নি তাকে জড়িয়ে শ্বশুরের দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। শ্বশুরের সংবাদ সম্মেলনের পরদিন রোববার সকালে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন ডেকে স্বামী রিফাত হত্যায় তার সম্পৃক্ততা আছে দাবি করে শ্বশুর দুলাল শরীফের দেওয়া বক্তব্যকে ‘বানোয়াট ও মনগড়া’ বলেছেন মিন্নি।

তিনি অভিযোগ করেন, যারা বরগুনায় ‘বন্ড ০০৭’ নামে সন্ত্রাসী গ্রুপ সৃষ্টি করিয়েছিলেন, তাঁরা খুবই ক্ষমতাবান ও বিত্তশালী। নেপথ্যের এই ক্ষমতাবানেরা বিচারের আওতা থেকে দূরে থাকা ও এই হত্যা মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য শ্বশুরকে চাপ দিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করিয়েছেন।

আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি অভিযোগ করেন, ‘নয়ন বন্ড একজন মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ী। তাঁর নামে অনেক মামলা ছিল। সে আমাকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করত। আমার ছোট ভাই ও বাবাকে হত্যার হুমকি দিত। এ জন্য তাঁর বিরুদ্ধে কখনো মুখ খোলার সাহস পাইনি।’ তিনি বলেন, ‘আমার শ্বশুর অসুস্থ। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আমার স্বামীকে হত্যার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাকে নিয়ে নেতিবাচক, কুরুচিপূর্ণ নানা পোস্ট এবং এডিট করা ছবি আপলোড করে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে শুরু থেকেই ষড়যন্ত্র শুরু করে। এর মূল উদ্দেশ্য এই ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা। কারণ, ০০৭ সন্ত্রাসী গ্রুপটি যারা সৃষ্টি করেছিলেন, তাঁরা খুবই ক্ষমতাবান ও বিত্তশালী।’