‌দুবেলা খাবারও জোটে না অর্ধেক পাকিস্তানীর

ডেস্ক রিপোর্টার, প্রকাশ: ২০১৯-০৭-২৯ ১২:৩৫:০১

দুবেলা দুমুঠো খাবারও সন্তানদের মুখে তুলে দিতে পারে না পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক পরিবার। আর্থিক দুরবস্থায় ধুঁকতে থাকা দেশেটিতে প্রথমবারের মতো হওয়া সমীক্ষায় পাওয়া এ রিপোর্ট গত শুক্রবার সামনে এসেছে।

এ তথ্য দিয়েছে পাকিস্তানের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা মন্ত্রণালয় (এনএইচএস)। রিপোর্টে আরও জানা গেছে, পাকিস্তানের ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবার ঠিকমতো খাবার কিনতে পারে না। ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার তাদের জোটে না। গিলগিট, বেলুচিস্তান, অধিকৃত কাশ্মীরসহ পাকিস্তানের চারটি প্রদেশের গ্রাম এবং শহরে এ সমীক্ষা চালানো হয়েছিল।

পাকিস্তানের জাতীয় পুষ্টি সমীক্ষা ২০১৮-১৯ (এনএনএস) থেকে জানা গেছে, পাকিস্তানের ৫০ শতাংশ পরিবার দু’বেলাই খেতে পায় না। ফলে তারা চূড়ান্ত অপুষ্টিতে ভুগছে। এনএনএস রিপোর্ট অনুসারে, পাকিস্তানের ৪০ দশমিক ২ শতাংশ শিশু জন্মগত অপুষ্টির শিকার। অপুষ্টির কারণে শিশুরা স্বাভাবিকভাবে বাড়তে পারছে না। ফলে তাদের শারীরিক বিকাশও হচ্ছে না। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর প্রতি ১০ জনে চারজন শারীরিক বাড়ন্ত থমকে রয়েছে।

১ লাখ ১৫ হাজার ৬০০ পরিবারের মধ্যে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩২৪ জন নারী, পাঁচ বছরের নিচে ৭৬ হাজার ৭৪২ জন শিশু এবং ১০-১৯ বছরের মধ্যে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৮৪৭ জন অপ্রাপ্তবয়স্কের ওপর সমীক্ষা করে এনএনএস। সমীক্ষায় সবার রক্ত এবং মূত্রের নমুনা, পানি, বাড়ি সংলগ্ন নিকাশ ব্যবস্থা সবকিছুই খতিয়ে দেখা হয়।

সমীক্ষায় আরও প্রকাশ, পাকিস্তানের মাত্র ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ নারী তাদের সন্তানদের বুকের দুধ পান করান। বংশগত অপুষ্টির কারণে নারীরা অসুস্থ সন্তানের জন্ম দেন। পাঁচ বছরের নিচে প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ হয় না এবং প্রাথমিক শিক্ষা জোটে না।

একই সঙ্গে অধিকাংশ পরিবারেই পুত্র-কন্যার মধ্যে বিভাজন চরমে। পাকিস্তানের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব চাইল্ড হেলথের সভাপতি অধ্যাপক জামাল রেজা বলেন, ২৪ বছর আগেও দেশে এমন অবস্থা ছিল।

এ পরিস্থিতি অবিলম্বে ঠিক না হলে পাকিস্তানের আগামী প্রজন্ম শুধু অপুষ্টিই দেখবে। তাই নারীদের গর্ভধারণ কালে পুষ্টির দিকে নজর দিতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।