১৬ নভেম্বর সমাগত। সেদিন নির্ধারিত হবে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অন্যতম শক্তিশালী সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষ ২ পদে কারা আসছেন।
১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন। তার আগে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনের কাজ সম্পূর্ণ করবেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ। মহানগরের সম্মেলন ১১ ও ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
সম্মেলনের দিন যতই এগিয়ে আসছে নেতাদের মধ্যে শুরু হয়েছে আনন্দ-উল্লাস, তোড়জোড় লবিং-তদবির। সন্ধ্যা হলেই শেখ হাসিনার ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে ভিড় জমান পদ প্রত্যাশীরা। আবার কেউ কেউ নেতাদের বাসায়ও ভিড় জমাচ্ছেন।
আড্ডা দিচ্ছেন নেতাকর্মীদের নিয়ে। তবে অনেককে দেখা না গেলেও ঠিকই পদ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এবার ত্যাগীদের প্রাধান্য দেয়া হবে, বিতর্কিত কাউকেই আগামী সম্মেলনে জায়গা দেয়া হবে না এমনটাই জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র নেতারা।
কাক্ষিত পদ পেতে এরই মধ্যে নিজেদের মেলে ধরতে নেতাকর্মীদের কাছে যাচ্ছেন পদ প্রত্যাশীরা। পদপ্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের লড়াইয়ে অন্তত এক ডজনেরও বেশি নেতা পদপ্রত্যাশা করছেন।
তারা নিজেরাও চান সংগঠনের নেতৃত্বের গুরু দায়িত্ব যে-ই পান, তিনি যেন স্বচ্ছ ভাবমুর্তি আর সাংগঠনিক দক্ষ হন। বর্তমান সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সভাপতি এবং ক্যাসিনো অভিযানে কিছুটা বিতর্কের মাঝে পড়েছেন এবং সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ পরপর দুই বার একই দায়িত্ব পালন করছেন। তাই নেতাকর্মীদের ধারণা শীর্ষ দুই পদেই এবার পরিবর্তন আসবে।
দুঃসময়ে পরীক্ষিত, ক্লিন ইমেজ আর ছাত্রলীগের রাজনীতি করে আসা নেতৃত্বের হাতেই এবার স্বেচ্ছাসেবক লীগের দায়িত্ব আসছে। যোগ্য, সাংগঠনিক, বিতর্কমুক্ত কমিটি গঠন হোক এমন প্রত্যাশা আমাদের সকলের।
এদিকে দলের শীর্ষ দুই পদের আলোচনায় রয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। সহযোগী সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে সাবেক ছাত্রলীগের নেতারা আসতে পারেন।
কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষ দুই পদের জন্য আলোচনা রয়েছেন অনেকে। তাদের মধ্যে সভাপতি পদে রয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ১/১১ তে নেত্রী মুক্তি আন্দোলনের রুপকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সফল সভাপতি, বর্তমান স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সোহেল রানা টিপু।
তৃনমূলের আস্থার প্রতিক বলা চলে শেখ সোহেল রানা টিপু্কে। সাংগঠনিক সম্পাদক থাকার কারণে স্বেচ্ছাসেবকলীগের সারা দেশের নেতা-কর্মীদের সাথেও রয়েছে তার নিবিড় যোগাযোগ। সাংগঠনিক দক্ষতায়ও যে কার চেয়ে এগিয়ে শেখ সোহেল রানা টিপু্।
টিপু’র সততা নিয়েও কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবে না। সৎ, ত্যাগী, কর্মী বান্ধব নেতা হিসেবে তাই সবার থেকে এগিয়ে শেখ সোহেল রানা টিপু্। এবার স্বেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষ দুটি পদের জন্য আলোচনায় থাকা শেখ সোহেল রানা টিপু আওয়ামী ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান।
১/১১তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুক্তির আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী এই নেতা বর্তমানে সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। দলের জন্য ত্যাগী, দুঃসময়ের পরীক্ষিত, ক্লিন ইমেজ আর কর্মীবান্ধব এক নেতা হিসেবে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি টিপু।
গত সংসদ নির্বাচনে তরুণ নেতা হিসেবে এমপি মনোয়নের দৌড়েও আলোচনায় ছিলেন তিনি। শেখ সোহেল রানা টিপু বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক লীগে নেতৃত্ব পাওয়ার প্রধান মানদণ্ড হোক ক্লিন ইমেজ, ত্যাগী মনোভাব, সাংগঠনিক দক্ষতা। জাতির পিতার আদর্শে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হাসিনার নির্দেশে মানুষের জন্য রাজনীতি করি। এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’
আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, সব সহযোগী সংগঠনে শীর্ষ পদে নতুন নেতা আসছেন। ছাত্রলীগের সাবেক অর্ধশত নেতার খোঁজখবর নেওয়ার কাজ চলছে। রাজনীতিতে ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা কতটুকু সফল ও দায়িত্ব পালনকালে কতটুকু সমালোচনামুক্ত ছিলেন এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, দীর্ঘদিন ধারাবাহিক রাজনীতির সাথে যারা জড়িত, পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক হিসেবে যারা নিবেদিত, এ ধরনের আদর্শবান, ত্যাগী ও যারা ঐতিহ্যগতভাবে জাতির পিতার আদর্শে বিশ্বাসী এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তাদের মাঝ থেকে আগামী কাউন্সিলে যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচিত করা হবে। তিনি আরো বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে কাউকে সংগঠনের জায়গা দেয়া হবে না। কোনো বিতর্কিত ব্যক্তি আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটিতে স্থান পাবে না।